ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কবিতার প্রশ্ন উত্তর, একাদশ শ্রেণির প্রথম সেমিস্টার: Ishwar Chandra Vidyasagar kobita question answer

এবারে প্রথমবার একাদশে সেমিস্টার পদ্ধতিতে MCQ ধরনের পরীক্ষা হবে। তথ্যগত না বোধ পরীক্ষণ মূলক প্রশ্ন হবে তার কোনো স্পষ্ট নির্দেশিকা সংসদ থেকে দেওয়া হয়নি। আবার, যেহেতু বিগত বছরের প্রশ্নপত্রও হাতে নেই তাই কিছুটা অনুমানের উপর ভিত্তি করে আমাদের প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে হবে। এমন ক্ষেত্রে যত বেশি জানা যায় ততই ভালো। সেটা মাথায় রেখেই আমাদের প্রশ্ন-উত্তর পর্ব তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলার প্রয়াস করা হয়েছে। আশা করা যায়, আমাদের সঙ্গে প্রস্তুতি নিলে পরিশ্রম বিফলে যাবে না, বরং খুব ভালো ফল হবে।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (জন্ম ১৮২৪ খ্রীষ্টাব্দ-মৃত্যু ১৮৭৩ খ্রীষ্টাব্দ), তার সর্ব শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলো ‘মেঘনাদবধ কাব্য’(১৮৬১)। বাংলা ভাষায় একমাত্র সফল মহাকাব্য এটি। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হলো ‘ব্রজাঙ্গনা’, ‘বীরাঙ্গনা’, চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ প্রভৃতি। ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ কবিতাটি চতুর্দশপদী কবিতাবলী থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে ১০০টি কবিতা রয়েছে তার মধ্যে ৮৬ তম কবিতা হলো ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ কবিতাটি।

১. বিদ্যাসাগরের আসল নাম কী ?

উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।

২. ‘বিদ্যার সাগর তুমি বিখ্যাত ভারতে’ কাকে, কেনো বিদ্যার সাগর বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ‘বিদ্যারসাগর’ বলা হয়েছে। তিনি পড়াশোনায় খুবই ভালো ছিলেন। তার পাণ্ডিত্যের কারণে তাকে বিদ্যাসাগর বলা হয়।

৩. ‘করুণার সিন্ধু তুমি’ কেনো বিদ্যাসাগরকে ‘করুণার সিন্ধু’ বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ দয়া এবং দানশীলতায় বিদ্যাসাগর বিখ্যাত ছিলেন। সিন্ধু নদীতে যেমন অপরিসীম জল থাকে তেমনি মানুষের জন্য তার হৃদয়ে অপরিসীম ভালোবাসা, স্নেহ ছিল তাই তাকে ‘করুণার সিন্ধু’ বলা হয়।

৪. ‘সেই জানে মনে’ কে, কী জানে ?

উত্তরঃ যে সমস্ত দরিদ্র এবং অসহায় মানুষ বিদ্যাসাগরের কাছে সাহায্য চেয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তারাই জানেন, বিদ্যাসাগর কত বড় ‘দীনের বন্ধু’। তার মধ্যে যে অফুরন্ত দয়া, ভালোবাসা রয়েছে সেটা সেই মানুষেই জানেন যিনি তার আশ্রয় নিয়েছেন।

  • ‘দীন’ শব্দের অর্থ- দরিদ্র-দুঃখী মানুষকে দীন বলা হয়।

৫. ‘দীন যে, দীনের বন্ধু’ অর্থ কী ?

উত্তরঃ বিদ্যাসাগর সর্বদা প্রকৃত বন্ধুর মতো অসহায় মানুষকে সাহায্য করেন। তাই তাকে দীনের বন্ধু বলা হয়েছে। এবং যিনি দরিদ্র-অসহায় অবস্থায় তার সাহায্য প্রার্থী হয়েছেন তিনিই জানেন বিদ্যাসাগর কত বড় পরোপকারী।

  • পরোপকারী- পরের উপকার করে যে।

৬. ‘উজ্জ্বল জগতে’ কে উজ্জ্বল জগতে ? কেনো তিনি উজ্জ্বল ?

উত্তরঃ বিদ্যাসাগর জগতে উজ্জ্বল। তিনি আজীবন নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সেবা করেছিলেন। দয়া, দানশীলতা এবং তার মহৎ কর্মের মধ্য দিয়ে তিনি জগতে উজ্জ্বল (বিখ্যাত) হয়ে আছেন।

৭. ‘হেমাদ্রির হেম-কান্তি অম্লান কিরণে’ অর্থ কী পঙ্‌ক্তিটির ?

উত্তরঃ বরফে ঢাকা পর্বতের চূড়ার সূর্যের কিরণ পড়লে অদ্ভুত সোনালী বর্ণের রশ্মি বিচ্ছুরিত হয়। সেই দৈবিক আলোকচ্ছটার সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সকলকে। এখানে পর্বত শৃঙ্গের সেই স্বর্ণ-উজ্জ্বল রূপের কথাই বলা হয়েছে।

৮. ‘হেমাদ্রির হেম-কান্তি অম্লান কিরণে’ ‘হেমাদ্রি’, ‘হেম-কান্তি’, শব্দের অর্থ কী ?

উত্তরঃ ‘হেম’ শব্দের অর্থ সোনা। ‘হেম-কান্তি’ বলতে সোনা থেকে প্রতিফলিত সোনালী রশ্মিকে বোঝায়। অপরদিকে ‘হেমাদ্রি’ শব্দের অর্থ স্বর্ণ-পর্বত বা হিমালয় পর্বত বা সুমেরু পর্বত।

৯. ‘হেমাদ্রির হেম-কান্তি’ এর সঙ্গে বিদ্যাসাগরকে কেনো তুলনা করা হয়েছে ?

উত্তরঃ সূর্যের আলোতে পর্ত শৃঙ্গ যেমন অসাধারণ সৌন্দর্যে জ্বলজ্বল করে ঠিক তেমনি বিদ্যাসাগরও তার পাণ্ডিত্য, দয়া, উদারতা, স্নেহ-ভালোবাসার কারণে বিশ্বে বিখ্যাত হয়ে আছেন। তাই তাকে কবি ‘হেমাদ্রির হেম-কান্তি’র সঙ্গে তুলনা করেছেন।

১০. ‘ভাগ্য-বলে পেয়ে সে মহা পর্বতে’ কেনো বিদ্যাসাগরকে মহা পর্বতের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে ?

উত্তরঃ পর্বতের মতোই বিদ্যাসাগর সেবা ধর্মে মহান-বিরাট। তার জ্ঞান, দয়া-মায়া, স্নেহ-ভালোবাসা, মনুষ্যত্ব পর্বতের মতোই বিশাল। তার পদতলে আশ্রয় নিলে অনেক সেবা পাওয়া যায় তাই তাকে পর্বতের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

১১. ‘গিরীশ’ শব্দের অর্থ কী ?

উত্তরঃ হিমালয় পর্বত।

১২. ‘কি সেবা তার সে সুখ-সদনে !’ কী কী সেবা পাওয়া যায় ?

উত্তরঃ বিদ্যাসাগরের চরণে আশ্রয় নিলে তৃষ্ণা মেটাতে জল, ক্ষুদা নিবারণের জন্য অমৃতর ফলের মতো খাদ্য, স্নেহ-ভালোবাসার সৌরভ, গাছের মতো ছায়া এবং রাত্রে সুখ-নিন্দ্রার জন্য আশ্রয় মেলে।

১৩. ‘বিমলা কিঙ্করী’ অর্থ কী ? কাকে, কেনো বিমলা কিঙ্করী বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ বিমলা মানে, স্বচ্ছ, পরিষ্কার, পবিত্র ইত্যাদি; এবং কিঙ্করী কথার অর্থ দাসী। পরিষ্কার জল দানের জন্য নদীকে বিমলা কিঙ্করী বলা হয়েছে।

১৪. ‘পরিমল’ অর্থ কী ?

উত্তরঃ সুগন্ধ বা সৌরভ।

১৫. ‘ক্লান্তি দূর করে !’ কী ক্লান্তি দূর করে ?

উত্তরঃ সুশান্ত নিদ্রা।

১৬. ‘যোগায় অমৃত ফল _________।’ শূন্যস্থান পূরণ।

উত্তরঃ পরম আদরে।

১৭. ‘বারি’ শব্দের অর্থ কী ?

উত্তরঃ জল।

১৮. ‘অম্লান’ অর্থ কী ?

উত্তরঃ মলিন, ফ্যাকাশে, বিবর্ণ।

১৯. মূল কাব্যগ্রন্থের নাম কী ?

উত্তরঃ চতুর্দশপদী কবিতাবলী। প্রকাশকাল ১৮৬৬ খ্রীষ্টাব্দ। এই কাব্যগ্রন্থে ১০০টি কবিতা রয়েছে, তার মধ্যে ৮৬ তম কবিতা হলো ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’।

২০. ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ কী ধরনের কবিতা এবং কোন ছন্দে রচনা করা হয়েছে ?

উত্তরঃ চতুর্দশপদী কবিতা বা ইংরাজি সনেট জাতীয় কবিতা। অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত।

২১. ‘পরিমলে ফুল-কুল _________ভরে। শূন্যস্থান পূরণ।

উত্তরঃ দশ দিশ।

২২. ‘বনেশ্বরী’ শব্দের অর্থ কী ?

উত্তরঃ শ্রেষ্ঠ গাছ বা বনের মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ গাছ।

২৩. ‘তরু দল’ অর্থ কী ?

উত্তরঃ গাছের দল। তরু মানে গাছ।

২৪. ‘সুখ-সদন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

উত্তরঃ ‘সদন’ মানে গৃহ বা আশ্রয়স্থল। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের আশ্রয়কে এখানে ‘সুখ-সদন’ বলা হয়েছে। তার আশ্রয়ে গেলে সমস্ত সমস্যা, দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, এমনকি তার সেবায় ক্ষুধা-তৃষ্ণা মেটে, রাত্রি বাসের জন্য পাওয়া যায় আশ্রয়ের স্থান।

আরও পড়- Olympic Games History: অলিম্পিক গেমসের ইতিহাস ও তার ৩ হাজার বছরের জীবনচক্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আরও পড়- Yogyashree Scheme: যোগ্যশ্রী প্রকল্প এর মাধ্যমে ফ্রিতে চাকরির ট্রেনিং দিবে সরকার

আরও পড়- পৃথিবীর উৎপত্তি সংক্রান্ত ল্যাপলাসের নীহারিকা মতবাদ, একাদশ শ্রেণি ভূগোল: Laplace Nebular Hypothesis

সবার সঙ্গে শেয়ার করুন
WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now

Leave a comment