একাদশ শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী এবারেই প্রথম সেমিস্টার ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হবে। ‘বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি’ বইটি সবেমাত্র ছাত্রছাত্রীরা হাতে পেয়েছে। এই গ্রন্থটি পর্ষদের তরফে বিনামূল্য ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হয়। বইটি এতো দেরি করে প্রকাশের পিছনে দায়ী পর্ষদ নিজেই। এদিকে প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষার দিনক্ষণ প্রায় ঘনিয়ে এলো। এমতাবস্থায় সঙ্গত কারণে মনে করাই যায় যে, সম্ভবত প্রথম সেমিস্টারের প্রশ্নপত্র কিছুটা সহজ হতে চলেছে বা অন্যভাবে বলতে গেলে হয়তো বা এবারের পরীক্ষায় মূল মূল বিষয়গুলো থেকে প্রশ্ন করা হবে। খুব গভীর বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হবে না। সেটি বিবেচনা করেই গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলোর উপর ফোকাস রেখে প্রশ্ন-উত্তর পর্বকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে।
২২. কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কাব্যের নাম কী ?
উত্তরঃ তাঁর কাব্য অভয়ামঙ্গল, চণ্ডীকামঙ্গল, অম্বিকামঙ্গল এই তিনটি নামে পরিচিত। মুকুন্দ চক্রবর্তী চন্ডীমঙ্গল কাব্য ধারার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন।
২৩. কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী কার অত্যাচারে বাস্তুভিটা পরিত্যাগ করেছিলেন ?
উত্তরঃ ডিহিদার মামুদ সরিফ।
২৪. কোন সময় মুকুন্দ চক্রবর্তীর চন্ডীমঙ্গল কাব্য রচিত হয় ?
উত্তরঃ আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগে যখন মানসিংহ বাংলার সুবেদার ছিলেন।
২৫. চন্ডীমঙ্গল কাব্য ‘সারদা চরিত’ কে রচনা করেন ?
উত্তরঃ দ্বিজমাধব, কবির আরেকটি নাম মাধবানন্দ। আনুমানিক ১৫৭৯ থেকে ১৬৪৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কাব্যটি রচিত হয়।
২৬. চন্ডীমঙ্গল কাব্যের দুটি খণ্ড/কাহিনি হলো-
উত্তরঃ
- আখেটিক খণ্ড, এই খণ্ডের নায়ক ব্যাধ কালকেতু।
- বণিক খণ্ড, এই খণ্ডের নায়ক ধনপতি সদাগর।
২৭. ধর্মমঙ্গল কাব্যের আদি/প্রাচীন কবি হলেন-
উত্তরঃ ময়ূরভট্ট, তাঁর কাব্যের নাম ছিল ‘হাকন্দ পুরাণ’। ধর্মমঙ্গল কাব্যের অপর একজন বিখ্যাত কবি হলেন ঘনরাম চক্রবর্তী।
আরও পড়- পুঁই মাচা গল্পের প্রশ্ন উত্তর
২৮. ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্য কে রচনা করেন ?
উত্তরঃ মঙ্গলকাব্যের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র রায়। তিনি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সভা কবি ছিলেন এবং তাঁরই আদেশে কাব্য রচনা করে রায়গুণাকর উপাধি প্রাপ্ত হন। তাঁর অন্যান্য রচনাগুলি হলো, ‘বিদ্যাসুন্দর’, ‘রসমঞ্জুরী’, ‘সত্যপীরের কথা’, ‘নাগাষ্টক’ প্রকৃতি
২৯. ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যের তিনটি খণ্ড হলো-
উত্তরঃ
- অন্নপূর্ণা মঙ্গল
- বিদ্যাসুন্দর
- মানসিংহ
৩০. কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর কাব্যের কবি ও কাব্য-
উত্তরঃ কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর কাব্যের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি হলেন ভারতচন্দ্র রায়। এছাড়াও আরেকজন বিশিষ্ট কবি হলেন রামপ্রসাদ সেন, তিনি ‘বিদ্যাসুন্দর কাব্য’ রচনা করেন।
৩১. প্রথম স্বয়ংসম্পূর্ণ শিবমঙ্গল বা শিবায়ন কাব্য হলো-
উত্তরঃ রামকৃষ্ণ রায় রচিত ‘শিব মঙ্গল’ কাব্য।
৩২. শিবমঙ্গল কাব্যের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাব্যটি হলো-
উত্তরঃ রামেশ্বর ভট্টাচার্য রচিত ‘শিব সংকীর্তন’।
৩৩. বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের ধারা শুরু হয়-
উত্তরঃ দ্বাদশ শতাব্দীতে জয়দেব রচিত ‘গীতগোবিন্দ’ থেকে।
৩৪. চণ্ডীদাস কোন শ্রেণির পদ রচনায় শ্রেষ্ঠ ছিলেন ?
উত্তরঃ আক্ষেপানুরাগ পদ রচনায়। এছাড়াও পূর্বরাগ এবং মাথুর পর্যায়ের পদ রচনায়ও তিনি অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছিলেন।
৩৫. মৈথিলী কোকিল কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ বৈষ্ণব পদকর্তা বিদ্যাপতিকে।
৩৬. অভিনব জয়দেব কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ বৈষ্ণব পদকর্তা জয়দেবের রচনার অনুসরণ বিদ্যাপতির পদে দেখা যায় বলে তাঁকে অভিনব জয়দেব বলা হয়।
৩৭. ব্রজবুলি ভাষায় কে পদ রচনা করেছিলেন ?
উত্তরঃ বিদ্যাপতি। যদিও এই নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ভাষা পণ্ডিতদের মতে, বিদ্যাপতি মাতৃভাষা মৈথলিতে তাঁর পদগুলো রচনা করেছিলেন। তারপর সেই পদগুলোতে বাংলা শব্দ মিশে এক নতুন ধরনের কৃত্রিম ভাষা সৃষ্টি হয় তাকেই ব্রজবুলি ভাষা বলা হয়।
৩৮. বিদ্যাপতির কতগুলি পদ পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ প্রায় আটশো।
৩৯. ছোট বিদ্যাপতি কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ বিদ্যাপতির পদগুলোকে বাংলায় অনুবাদ করেন কবিরঞ্জন। তাই তাঁকে ‘ছোট বিদ্যাপতি’ বলা হয়।
৪০. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রজবুলি ভাষা ব্যবহার করেন-
উত্তরঃ ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী গ্রন্থে।
৪১. বিদ্যাপতি সময়কাল –
উত্তরঃ বৈষ্ণব পদকর্তা বিদ্যাপতি বিহারের অন্তর্গত দ্বারভাঙ্গা জেলার বিসফি গ্রামে আনুমানিক পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে জন্মগ্রহণ করেন।
৪২. বিদ্যাপতির অন্যান্য রচনাগুলি হলো-
উত্তরঃ
- কীর্তিলতা
- ভূপরিক্রমা
- পুরুষ পরীক্ষা
- লিখনাবলী
- গঙ্গাবাক্যাবলী
- দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনী
আরও পড়- মধ্যযুগে বাংলার সমাজ ও সাহিত্য প্রশ্ন উত্তর, প্রথম পর্ব
আরও পড়- শাস্ত্র হিসেবে ভূগোল প্রথম পর্ব