১. মহাকাশ কাকে বলে ?
উত্তরঃ পৃথিবীর চারদিকে যে সীমাহীন জগৎ রয়েছে যার মধ্যে অগণিত গ্রহণ, নক্ষত্র, গ্রহাণুপুঞ্জ, ধূমকেতু, উল্কা, নীহারিকা রয়েছে তাকেই মহাকাশ বলে।
২. জ্যোতিষ্ক কাকে বলে ? উদাহরণ।
উত্তরঃ রাতের বেলা মহাকাশের মধ্যে যে সমস্ত আলোক বিন্দু আমরা দেখতে পারি সেগুলি সমস্তই হলো জ্যোতিষ্ক। গ্রহণ, নক্ষত্র, গ্রহাণুপুঞ্জ, ধূমকেতু, উল্কা, নীহারিকা সবই জ্যোতিষ্ক।
৩. নীহারিকা কাকে বলে ?
উত্তরঃ ধূলিকণা, হাইড্রোজেন গ্যাস এবং প্লাসমা দ্বারা গঠিত এক ধরনের আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ। নীহারিকাকে ইংরেজিতে Nebula বলা হয়। এটি একটি ল্যাটিন শব্দ, এর অর্থ কুয়াশা। নীহারিকা থেকেই নক্ষত্রের জন্ম হয়। ক্যাটস আই (Cat’s eye Nebula) একটি বিখ্যাত নীহারিকা।
৪. গ্যালাক্সি কাকে বলে ?
উত্তরঃ গ্রহণ, নক্ষত্র, গ্রহাণুপুঞ্জ, ধূমকেতু, উল্কা, নীহারিকা, আন্তঃনাক্ষত্রিক গ্যাস, প্লাসমা, ধূলিকণা ইত্যাদি নিয়ে গঠিত একটি বিশালাকার ঘূর্ণায়মান ক্ষেত্রকে গ্যালাক্সি বলে। বস্তুত মহাকাশে যা যা বস্তু রয়েছে সমস্ত কিছুই গ্যালাক্সির অন্তর্ভুক্ত। ‘গ্যালাক্সি’ শব্দটির উৎস গ্রিক গালাক্সিআস্ (γαλαξίας) শব্দ, যার আক্ষরিক অর্থ, ‘দুধালো’। এখান থেকেই আমাদের গ্যালাক্সির নাম মিল্কিওয়ে (Milky Way) এসেছে।
৫. ছায়াপথ কাকে বলে ?
উত্তরঃ অগণিত নক্ষত্র দ্বারা গঠিত উজ্জ্বল আলোর একটা পথ বা বলয় রাতের আকাশে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত দেখা যায়, একেই ছায়াপথ বা আকাশগঙ্গা বলে।
৬. মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে কতগুলো নক্ষত্র আছে ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানীদের অনুমান ২০০-৪০০ বিলিয়ন নক্ষত্র। আমরা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে থাকি। (১ বিলিয়ন = ১০০ কোটি)
৭. আলোকবর্ষ কাকে বলে ?
উত্তরঃ আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে সেই দূরত্বকে এক আলোকবর্ষ বলা হয়।
৮. মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে আলোর কত সময় লাগবে ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানীদের অনুমান ১ লক্ষ আলোকবর্ষ।
৯. আমাদের নিকটতম গ্যালাক্সির নাম কী ?
উত্তরঃ অ্যান্ড্রোমিডা ( Andromeda ) গ্যালাক্সি।
১০. মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি থেকে অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির দূরত্ব কত ?
উত্তরঃ ২৫ লক্ষ আলোকবর্ষ।
১১. নক্ষত্রমন্ডল কাকে বলে ?
উত্তরঃ কয়েকটি নক্ষত্র দলবদ্ধ ভাবে একসঙ্গে অবস্থান করে যখন একটি বিশেষ আকৃতি ধারণ করে তখন তাকে নক্ষত্রমন্ডল বলে। যেমন কালপুরুষ, সপ্তর্ষিমণ্ডল, রোহিনী, ক্যাসিওপিয়া ইত্যাদি।
জানা-অজানাঃ পৃথিবীর ক্ষেত্রফল প্রায় ৫১ কোটি বর্গ কিমি। নিরক্ষীয় অঞ্চলে গড় ব্যাস হল ১২৭৫৬ কিমি এবং গড় ব্যাসার্ধ ৬৩৭৮ কিমি (মেরু অঞ্চলে ১২৭১৪/৬৩৫৭ কিমি)। গণনার সুবিধার জন্য পৃথিবীর ব্যাসকে ১২৮০০ কিমি এবং ব্যাসার্ধকে ৬৪০০ ধরা হয়। পৃথিবীর পরিধি ৪০০৭৫ কিমি। তথ্য সূত্র- NASA
১২. গ্রহাণুপুঞ্জ (Asteroid) কাকে বলে ?
উত্তরঃ মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানে অসংখ্য ক্ষুদ্রাকার শিলাখণ্ড সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে এগুলোকে গ্রহাণুপুঞ্জ বলা হয়।
১৩. আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় উপগ্রহের নাম কী ?
উত্তরঃ বৃহস্পতির ৬৭ টি উপগ্রহ রয়েছে তার মধ্যে গ্যানিমেড (Ganymede) হল বৃহত্তম উপগ্রহ।
আরও পড়- Olympic Games History: অলিম্পিক গেমসের ইতিহাস ও তার ৩ হাজার বছরের জীবনচক্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৪. পৃথিবীর যমজ গ্রহ কোনটি ?
উত্তরঃ শুক্রগ্রহ।
১৫. সূর্য থেকে দূরত্ব অনুযায়ী আটটি গ্রহ হল-
উত্তরঃ বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন। এদের কুলীন গ্রহ বলা হয়। প্লুটো একটি বামন গ্রহ।
১৬. সব চেয়ে বড় বামন গ্রহ কোনটি ?
উত্তরঃ বামন গ্রহের মধ্যে এরিস সবচেয়ে বড়।
১৭. পৃথিবীর ওজন কে প্রথম পরিমাপ করেন ?
উত্তরঃ ব্রিটিশ বিজ্ঞানী হেনরি ক্যাভেনডিশ। ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি গাণিতিক ভাবে পৃথিবীর ওজন নির্ণয় করেন।
১৮. পৃথিবীর ওজন কত ?
উত্তরঃ ৫.৯৭২২×১০^২৪ কিলোগ্রাম।
১৯. পৃথিবী সৃষ্টির গ্যাসীয় মতবাদের প্রবক্তা কে ?
উত্তরঃ ইমানুয়েল কান্ট। Allgemeine Naturgeschichte und Theorie des Himmels (“Universal Natural History and Theory of the Heavens”) এ ১৭৫৫ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
২০. ইমানুয়েল কান্টের গ্যাসীয় মতবাদের মূল বক্তব্য কী ?
উত্তরঃ
- মেঘপুঞ্জঃ প্রায় ৪.৬৩ ব্রিলিয়ান বছর আগে গোটা মহাবিশ্ব বা মহাকাশ শীতল ও গতিহীন কঠিন পদার্থের মেঘপুঞ্জ দিয়ে গঠিত ছিল।
- সংঘর্ষঃ কালক্রমে অভিকর্ষজ টানে আদিম বস্তুকণাগুলির মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে।
- গতি ও তাপঃ প্রচন্ড সংঘর্ষে বস্তুকণাগুলি গতিপ্রাপ্ত হয়ে ঘুরতে থাকে এবং উত্তপ্ত হয়। ফলে পদার্থগুলি গ্যাসীয় অবস্থায় পরিণত হয়।
- নীহারিকার সৃষ্টিঃ পরের ধাপে উত্তপ্ত ও ঘূর্ণায়মান গ্যাসীয় পদার্থের মেঘপুঞ্জ নীহারিকায় পরিণত হয়।
- বলয় গঠনঃ পরবর্তীতে নীহারিকাটি শীতল এবং সংকুচিত হয়। কিন্তু নীহারিকার কেন্দ্রের চারদিকে গ্যাসীয় মেঘপুঞ্জ প্রচন্ড গতিতে ঘুরতে থাকে ফলে কৌণিক ভরবেগ ও কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে নীহারিকার মধ্যভাগ ক্রমশ প্রসারিত হতে থাকে। এর ফলে কতগুলি গোলাকার বলয়ের সৃষ্টি হয়।
- সূর্য ও গ্রহের উৎপত্তিঃ নীহারিকার মাঝের অংশটি সূর্য পরিণত হয় এবং বলয়গুলি ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বিভিন্ন গ্রহে আকার ধারণ করে।
২১. ইমানুয়েল কান্টের গ্যাসীয় মতবাদের বিপক্ষে কী কী সমালোচনা করা হয় ?
- আদিম বস্তুকণাগুলি কোথা থেকে সৃষ্টি হয়েছে তার কোন নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই।
- কৌণিক ভরবেগের স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।
- নিহারিকার মধ্যস্থ পদার্থগুলির ঘূর্ণন বেগ সম্পর্কে পরিষ্কার কোন বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।
- শুক্র গ্রহ পূর্ব থেকে পশ্চিমে আবর্তিত হয় আবার ইউরেনাস দক্ষিণ থেকে উত্তরে আবর্তন করে। গ্রহ- উপগ্রহগুলির আবর্তনের দিক আলাদা আলাদা কেন, তার ব্যাখ্যা কান্টের মতবাদ সঠিকভাবে দিতে পারে না।
আরও পড়- শাস্ত্র হিসেবে ভূগোল, PART 1
আরও পড়- বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়ো প্রশ্ন উত্তর, PART 1
আরও পড়- WBCS পরীক্ষা সম্পর্কে A-Z খাঁটি তথ্য, All in one click
***পরবর্তী পর্বে আরও প্রশ্ন উত্তর প্রকাশ করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত পড়াশোনা কর & Stay tune…