অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর, মাধ্যমিক প্রস্তুতি: Abhishek kobita class 10

মাধ্যমিকে অসাধারণ রেজাল্ট কে না করতে চায়, সবাই চায়। ছাত্রছাত্রীরা প্রচণ্ড পরিশ্রম এবং চেষ্টা করে মাধ্যমিকে দুর্দান্ত সাফল্য পেতে। আমরা ‘জীবনযুদ্ধ টিম’ রাজ্যের ছেলেমেয়েদের মাধ্যমিক প্রস্তুতির সেই পরিশ্রমকে কিছুটা লাঘব করতে কিঞ্চিৎ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এখানে বাংলা বিষয়ের সমস্ত পাঠক্রমের প্রশ্ন-উত্তর খুবই উচ্চ মান বজায় রেখে প্রকাশ করছি। ধাপে ধাপে সমস্ত সিলেবাসের বিষয়ই আমরা প্রকাশ করবো। আশা করি আমাদের ‘স্টাডি মেটেরিয়াল’ পড়ে অসাধারণ সাফল্য মিলবে।
বাংলা বিষয়ের উত্তর কীভাবে লিখলে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া যায় তারই কিছু টিপস্ দেওয়া হলো। এগুলো অনুসরণ করো দারুণ উপকৃত হবে।

সব সময় কোনো উত্তর লেখার শুরুতেই কোন কবির বা লেখকের কোন কবিতা বা গল্প থেকে প্রশ্নটি এসেছে তা অবশ্যই লিখতে হবে। আমাদের উত্তরগুলোতে সব সময় প্রথমের ওই অংশটি নেই কিন্তু তোমাদের সেটা প্রত্যেক উত্তরেই লিখতে হবে, মনে রেখো।
উত্তরগুলোতে মাঝে মাঝে বাঁকা হরফে কিছু বাক্য দেওয়া আছে। এর অর্থ হলো ওই বাঁকা বাক্যগুলো যে কোনো উত্তরেই ব্যবহার করা যাবে। ওই বাঁকা বাক্যগুলো হলো অলঙ্কারের মতো, উত্তরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এমন বাক্যগুলি অনেকটাই বেশি নম্বর পেতে সাহায্য করে।
আর, উত্তরের মধ্যে গল্প বা কবিতায় ব্যবহার করা হয়েছে এমন পঙ্‌ক্তি/বাক্য ইনভার্টেড কমার ( ‘__’ ) মধ্যে দিতে হবে। এটাও খুব জরুরি।
আমাদের সঙ্গে থাকো ধাপে ধাপে সমস্ত বিষয়ের উত্তর প্রকাশ করা হবে।

অভিষেক
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (জন্ম ১৮২৪ খ্রীষ্টাব্দ-মৃত্যু ১৮৭৩ খ্রীষ্টাব্দ), তার সর্ব শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলো ‘মেঘনাদবধ কাব্য’(১৮৬১)। বাংলা ভাষায় একমাত্র সফল মহাকাব্য এটি। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হলো ‘ব্রজাঙ্গনা’, ‘বীরাঙ্গনা’, চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ প্রভৃতি। ‘অভিষেক’ কবিতাটি ‘মেঘনাদবধ কাব্যগ্রন্থ’ থেকে নেওয়া হয়েছে। কাব্যগ্রন্থটি নয়টি সর্গে বিভক্ত। তার মধ্যে প্রথম সর্গের অংশ হল ‘অভিষেক’ কবিতাটি। ইংরেজি Blank Verse ছন্দের অনুকরণে মধুসূদন দত্তের নিজস্ব সৃষ্টি অমিত্রাক্ষর ছন্দে ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ রচিত।

১. প্রশ্নঃ  “ কি হেতু, মাতঃ গতি তব আজি

এ ভবনে ? কহ দাসে লঙ্কার কুশল।“  

                 বা

  অম্বুরাশি-সুতা উত্তরিলা; –  “ হায় ! পুত্র, কি আর কহিব

                          কনক- লঙ্কার দশা ! “

                                                   অম্বুরাশি সুতা কে ? তিনি কী সংবাদ

দিয়েছিলেন ?  লঙ্কার দশা বর্ণনা কর।

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত “অভিষেক”  কবিতাংশ থেকে  উক্ত পঙ্‌ক্তিটি নেওয়া হয়েছে।

‘অম্বুরাশি সুতা’ অর্থাৎ সমুদ্র কন্যা ধাত্রী মায়ের ছদ্মবেশ ধারণ করে ইন্দ্রজিতের কাছে যান। সেই সময় রামের সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভ করে রাবণপুত্র প্রমোদ কাননে স্ত্রী প্রমীলা এবং ‘বামাদল’ এর সঙ্গে আনন্দ-বিলাসে মত্ত ছিলেন। ধাত্রী মাকে দেখে মেঘনাদ ‘কনক আসন’ থেকে উঠে এসে তাকে প্রণাম করেন এবং লঙ্কার খবরা-খবর জানতে চান। প্রত্যুত্তরে মাতা বলেন,  “ হায় ! পুত্র, কি আর কহিব কনক- লঙ্কার দশা !“ স্বর্ণলঙ্কার আকাশে যে দুর্যোগের কালো মেঘ ঘনিয়ে এসেছে আর সেই দুর্যোগে ভাই বীরবাহুর মৃত্যু ঘটেছে  ; সেই মর্মান্তিক দুঃসংবাদ তিনি রাবণ আত্মজকে দেন। তাঁর পিতা, পুত্র হারানোর শোক এবং প্রতিশোধের আগুন বুকে নিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন সেই সংবাদও দেন। আসন্ন মহাসমরে রাক্ষস বীরশ্রেষ্ঠ যাতে প্রমোদ কাননে আনন্দ-বিলাস ত্যাগ করে শীঘ্রই তাঁর পিতার সঙ্গে যুদ্ধে যোগদান করেন, সেই অভিপ্রায় নিয়েই ‘অম্বুরাশি সুতা’ ইন্দ্রজিতের কাছে এসে উপস্থিত হন।

২ প্রশ্নঃ   “এ বারতা, এ অদ্ভুদ বারতা,”    কোন বার্তাকে অদ্ভুদ বার্তা বলা হয়েছে

? কেন ?

উত্তরঃ  ‘অম্বুরাশি সুতা’ ধাত্রী মায়ের ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রমোদ কাননে আসেন। রামের দ্বারা  ভাই বীরবাহুর মৃত্যু এবং পিতা রাবণের যুদ্ধের প্রস্তুতির খবর তিনি রাক্ষস শ্রেষ্ঠ বীর  মেঘনাদকে দেন। এই দুঃসংবাদ শোনে ইন্দ্রজিৎ বিস্মিত হয়ে যান। কারণ, ইতিপূর্বে রাবণ পুত্র ‘বীরেন্দ্রকেশরী’ এক মহাসংগ্রামে রামকে পরাস্ত এবং নিহত করেন। তারপর রামের পুরর্জীবন লাভ এবং বীরবাহুকে হত্যার সংবাদ মেঘনাদের কাছে যেমন বেদনাদায়ক তেমনি অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়। তাই তিনি এই সংবাদকে “ এ অদ্ভুদ বারতা” বলেছেন।

৩ প্রশ্নঃ   “রক্ষ রক্ষঃকুল  মান,

                          এ কালসমরে, রক্ষঃ- চূড়ামণি”      

‘রক্ষঃ- চূড়ামণি’ কাকে বলা হয়েছে ? প্রসঙ্গ।

উত্তরঃ   রাক্ষসাধিপতি রাবণ পুত্র বীর মেঘনাদকে রক্ষঃ-চূড়ামণি বলা হয়েছে। তিনি রাক্ষস কুলে সর্বশ্রেষ্ঠ বীর যোদ্ধা তাই তাকে ‘রক্ষঃ-চূড়ামণি’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

‘অম্বুরাশি সুতা’ ধাত্রী মায়ের ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রমোদ কাননে আসেন। রামের দ্বারা  ভাই বীরবাহুর মৃত্যু এবং পিতা রাবণের যুদ্ধের প্রস্তুতির খবর তিনি রাক্ষস শ্রেষ্ঠ বীর  মেঘনাদকে দেন। এই দুঃসংবাদ শোনে ইন্দ্রজিৎ বিস্মিত হয়ে যান। কারণ, ইতিপূর্বে রাবণ পুত্র ‘বীরেন্দ্রকেশরী’ এক মহাসংগ্রামে রামকে পরাস্ত এবং নিহত করেন। তারপর রামের পুরর্জীবন লাভ এবং বীরবাহুকে হত্যার সংবাদ মেঘনাদের কাছে যেমন বেদনাদায়ক তেমনি অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়। এই খবরে তাঁর হৃদয়েও প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠে। ধাত্রী মা তাই সত্বর পিতার সঙ্গে ‘কালসমরে’ অবতীর্ণ এবং জয়ী হয়ে রাক্ষসকুলকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার কথা বলেছেন।

  • আখ্যায়িত করা আর অভিহিত করা ; দু’টি শব্দর অর্থ একই। যার অর্থ- ডাকা হয়েছে বা নাম দেওয়া হয়েছে এমন।
  • সত্বর- তাড়াতাড়ি।
  • অবতীর্ণ- নামা। মহাযুদ্ধে নামা। যেমন- আমি খেলতে মাঠে অবতীর্ণ হলাম।
  • সমর- যুদ্ধ।  (কালসমর- কাল রূপ সমর ; রূপক কর্মধারয় সমাস।)

৪ প্রশ্নঃ   “ছিঁড়িলা কুসুমদাম রোষে মহাবলী”   মহাবলী কে ? কেনো তিনি

কুসুমদাম ছিঁড়লেন ?

উত্তরঃ  রাক্ষস রাজাধিপতি রাবণের বীরপুত্র মেঘনাদকে ‘মহাবলী’ বলা হয়েছে।

‘অম্বুরাশি সুতা’ ধাত্রী মায়ের ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রমোদ কাননে আসেন। রামের দ্বারা  ভাই বীরবাহুর মৃত্যু এবং পিতা রাবণের যুদ্ধের প্রস্তুতির খবর তিনি রাক্ষস শ্রেষ্ঠ বীর  মেঘনাদকে দেন। এই দুঃসংবাদ শোনে ইন্দ্রজিৎ বিস্মিত হয়ে যান। কারণ, ইতিপূর্বে রাবণ পুত্র ‘বীরেন্দ্রকেশরী’ এক মহাসংগ্রামে রামকে পরাস্ত এবং নিহত করেন। তারপর রামের পুরর্জীবন লাভ এবং বীরবাহুকে হত্যার সংবাদ মেঘনাদের কাছে যেমন বেদনাদায়ক তেমনি অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়। এই খবরে তাঁর হৃদয়েও প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠে। তিনি  ক্রুদ্ধ হয়ে পরিহিত ফুলের মালা টেনে ছিঁড়ে ফেলেন।

মেঘনাদ রাক্ষস বীরশ্রেষ্ঠ হয়েও স্বর্ণলঙ্কার ঘোর সংকটের দিনে তিনি প্রমোদ কাননে আনন্দ-বিলাসে মত্ত হয়ে ছিলেন। একদিকে ভাই বীরবাহুর মৃত্যু শোক, অপরদিকে, নিজের নিষ্ক্রিয়তার প্রতি ধিক্কার ; এই দুইয়ের কারণে তাঁর রোষাগ্নি জ্বলে উঠে।

  • নিষ্ক্রিয়তা- কাজ না করে অলস হয়ে পড়ে থাকা।
  • রোষাগ্নি- রোষ + অগ্নি । রোষ মানে রাগ। রাগ যেন আগুনের মতো জ্বলে উঠেছে।
  • রোষ অগ্নির ন্যায়- ( উপমান + উপমিত ) উপমিত কর্মধারয় সমাস।

৫ প্রশ্নঃ  “পদতলে পড়ি শোভিল কুণ্ডল”   প্রসঙ্গ লেখ।

উত্তরঃ   রাক্ষস রাজাধিপতি রাবণের বীরপুত্র মেঘনাদকে ‘মহাবলী’ বলা হয়েছে।

‘অম্বুরাশি সুতা’ ধাত্রী মায়ের ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রমোদ কাননে আসেন। রামের দ্বারা  ভাই বীরবাহুর মৃত্যু এবং পিতা রাবণের যুদ্ধের প্রস্তুতির খবর তিনি রাক্ষস শ্রেষ্ঠ বীর  মেঘনাদকে দেন। এই দুঃসংবাদ শোনে ইন্দ্রজিৎ বিস্মিত হয়ে যান। কারণ, ইতিপূর্বে রাবণ পুত্র ‘বীরেন্দ্রকেশরী’ এক মহাসংগ্রামে রামকে পরাস্ত এবং নিহত করেন। তারপর রামের পুরর্জীবন লাভ এবং বীরবাহুকে হত্যার সংবাদ মেঘনাদের কাছে যেমন বেদনাদায়ক তেমনি অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়। এই খবরে তাঁর হৃদয়েও প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠে। তিনি  ক্রুদ্ধ হয়ে পরিহিত ফুলের মালা টেনে ছিঁড়ে ফেলেন।  সোনার বালা এবং কানের অলংকারও ছুঁড়ে ফেলে দেন। পদতলে পতিত কর্ণালংকার যেন অপরূপ সৌন্দর্য ধারণ করে। কবির কথায়, “যথা অশোকের ফুল অশোকের তলে আভাময় !” অর্থাৎ  অশোক ফুল যেমন বাতাসের দোলায় গাছের তলায় পড়ে নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের রচনা করে ঠিক তেমনি ‘কুণ্ডল’ও মেঘনাদের পায়ের তলায় শোভিত হল। কবি কবিত্ব প্রতিভার অনন্য পরিচয় উক্ত পঙ্‌ক্তিটিতে পাওয়া যায়।

  • কর্ণালংকার- কর্ণ + অলংকার ; কানের দুল ।
  • নয়নাভিরাম- যা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। এত্ত এত্ত সুন্দর !
  • কবি কবিত্ব প্রতিভার অনন্য পরিচয়- কবির অসসাধারণ কবি প্রতিভার ছিল, যা তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে।

৬ প্রশ্নঃ    “ধিক মোরে”   কে, কেনো ধিক্কার দিয়েছে ?

বা

             “ ঘুচাব এ অপবাদ, বধি রিপুকুলে।“  কার, কিসের অপবাদ ?  

উত্তরঃ   মহাবলী রাবণপুত্র বীরেন্দ্রকেশরী ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার দিয়েছেন।

স্বর্ণলঙ্কার ভগ্যাকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা। রঘুবর রাম এক মহাসমরে মেঘনাদের ভাই বীরবাহুকে হত্যা করেন। আরও তীব্রতর আক্রমণের আশঙ্কা গোটা লঙ্কা জুড়েই। এদিকে, রাক্ষসাধিপতি পুত্র হারানোর শোনে মুহ্যমান। শোকে দগ্ধ হৃদয় নিয়েই তিনি পুত্র হত্যার প্রতিশোধ নিতে বদ্ধ পরিপক। এক মহাসংগ্রামের জন্য তিনিও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

অপরদিকে, এক ভয়ংকর যুদ্ধে শ্রীরামকে পরাস্ত এবং নিহত করে মেঘনাদ অবসর যাপনের জন্য প্রমোদ কাননে ‘বামাদল’কে নিয়ে আনন্দ-উল্লাসে ব্যস্ত ছিলেন। এই অবসরে তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনা  ঘটে। মাতৃভূমির এই শোকস্তব্ধ পরিস্থিতির কিছুই তিনি জানতে পারেননি। অথচ, রাক্ষকুল এবং নিজ পরিবারের এই ঘোরতর সংকটের দিনে তার মতো জগৎ শ্রেষ্ঠ মহাবীর  যোদ্ধাকে পিতার পাশে থেকে আসন্ন মহাসমরে ‘রিপুকুল’কে সমূলে ধ্বংস করার জন্য প্রস্তুত হওয়ার কথা ছিল। তাঁর এই নিষ্ক্রিয়তাকে তিনি ‘অপবাদ’ অভিহিত করে নিজেকে ধিক্কার দিয়েছেন। পঙ্‌ক্তিটিতে মেঘনাদের কর্তব্যবোধ, দেশপ্রেম এবং স্বজাতির প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশের মধ্য দিয়ে একজন যথার্থ যোদ্ধার  স্বরূপ প্রকাশ পেয়েছে।

  • মুহ্যমান- শোকে-দুঃখে-যন্ত্রণায় ভেঙে পড়া। যেমন- জ্বরে আমি মুহ্যমান হয়ে পড়েছি।
  • বদ্ধ পরিপক- দৃঢ় সংকল্প।
  • শোকস্তব্ধ পরিস্থিতি- শোকে-দুঃখে কাতর হওয়া পরিস্থিতি।

৭ প্রশ্নঃ    “সাজিলা রথীন্দ্ররষভ বীর-আভরণে”   কীভাবে ‘সাজিলা’ ইন্দ্রজিৎ ?

উত্তরঃ   ছদ্মবেশী ধাত্রী মায়ের কাছে ভাই বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ এবং পিতার যুদ্ধ সজ্জার কথা মেঘনাদ জানতে পারেন। পুত্র হত্যার প্রতিশোধ নিতে এবং রাক্ষসকুলকে রক্ষা করতে রাক্ষসাধিপতি রাবণ মহাসংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আসন্ন মহাসমরে পিতার সঙ্গে যোগদান দিতে তাই বীরেন্দ্রকেশরী মেঘনাদ রণসজ্জায় সজ্জিত হন।  তাঁর সেই রণসজ্জা যেন পার্বতী পুত্র কার্তিকের  তারকাসুর বধের সময়কার সজ্জার মতো কিংবা বৃহন্নলারূপী অর্জুন বিরাটপুত্রদের সঙ্গে যখন গোধন উদ্ধারের জন্য কৌরবদের সঙ্গে যুদ্ধের সাজ করেন ঠিক তেমন বলে কবি বর্ণনা করেছেন। ইন্দ্রজিতের মতো একজন জগৎ শ্রেষ্ঠ বীর যোদ্ধার রণসজ্জা যে ‘বীর-আভরণে’ ভূষিত হবে কবি সেটায় তাঁর নিপুণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন।

বীরেন্দ্রকেশরী- বীরের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বীর।

বৃহন্নলা- হিজড়া। (তৃতীয় লিঙ্গ)

৮ প্রশ্নঃ    “হাসি উত্তরিলা মেঘনাদ”  কে, কেন হাসে ? হেসে তিনি কী বললেন ? 

উত্তরঃ   প্রমোদকাননে থাকাকালীন ধাত্রী মায়ের কাছে লঙ্কার ঘোর সংকটের কথা জানতে পেরে মেঘনাদ সত্বর পিতার কাছে ফিরতে রথে আরোহণ করেন। হটাৎ স্বামীকে তড়িঘড়ি করে রথে প্রস্থান করতে দেখে স্ত্রী প্রমীলা ছুটে এসে তাঁর হাত ধরেন এবং কেঁদে প্রশ্ন করেন,  “কোথা প্রাণসখে, রাখি এ দাসীরে, কহ, চলিলা আপনি ?”  শুধু তাই নয় তিনি একটি সুন্দর উপমা ব্যবহার করে স্বামীর সঙ্গী হতে চান, গভীর অরণ্যে হাতি যখন চলে তখন তার পায়ে অনেক লতাপাতা জড়িয়ে যায়। হাতি যেন লতার কাছে প্রণয়াকাঙ্ক্ষী। লতার রঙ্গরসে ‘প্রেমিকবর’ গজ মাহারাজ কোন ভ্রূক্ষেপ না করলেও প্রণয় অভিলাষিণীকে অনন্ত ত্যাগ করে না ! তবে মেঘনাদ স্ত্রীকে ফেলে রেখে কেন চলে যাচ্ছেন সেই প্রশ্ন প্রমীলাদেবী স্বামীকে করেন। স্ত্রীর অনুরাগের কথা শোনে মেঘনাদ হেসে ফেলেন এবং স্ত্রীর মানভঞ্জনের হেতু বলেন,  “ইন্দ্রজিতে জিতি তুমি, সতি, বেঁধেছ যে দৃঢ় বাঁধে, কে পারে খুলিতে সে বাঁধে ?” মহাসমরের শেষে তিনি যে শীঘ্রই স্ত্রীর কাছে ফিরে আসবেন সেই প্রতিশ্রুতিও দেন।

  • মানভঞ্জন- অভিমান থামান।
  • সত্বর- তাড়াতাড়ি।
  • প্রতিশ্রুতি-আশ্বাস।

আরও পড়ুন- Olympic Games History: অলিম্পিক গেমসের ইতিহাস ও তার ৩ হাজার বছরের জীবনচক্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আরও পড়ুন- অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর, PART 2

আরও পড়- আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন উত্তর, দশম শ্রেণির আফ্রিকা কবিতা: Afrika Kobita Question Answer

সবার সঙ্গে শেয়ার করুন
WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now

Leave a comment