এবারে প্রথমবার একাদশে সেমিস্টার পদ্ধতিতে MCQ ধরনের পরীক্ষা হবে। তথ্যগত না বোধ পরীক্ষণ মূলক প্রশ্ন হবে তার কোনো স্পষ্ট নির্দেশিকা সংসদ থেকে দেওয়া হয়নি। আবার, যেহেতু বিগত বছরের প্রশ্নপত্রও হাতে নেই তাই কিছুটা অনুমানের উপর ভিত্তি করে আমাদের প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে হবে। এমন ক্ষেত্রে যত বেশি জানা যায় ততই ভালো। সেটা মাথায় রেখেই আমাদের প্রশ্ন-উত্তর পর্ব কেবলমাত্র MCQ ধরনের না রেখে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলার প্রয়াস করা হয়েছে। যাতে প্রশ্ন-উত্তরগুলো মন দিয়ে পড়লে যে জ্ঞান অর্জিত হবে তার মাধ্যমে যে কোন প্রশ্নের সমাধান করা যায়। আশা করা যায়, আমাদের সঙ্গে প্রস্তুতি নিলে পরিশ্রম বিফলে যাবে না, বরং খুব ভালো ফল হবে।
চারণকবি কবিতার মূলভাব বা বিষয়বস্তু কী ?
‘চারণকবি’ কবিতায় কবি ভারভারা রাও রাষ্ট্রের স্বৈরচারী শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়েছেন। শাসক শক্তি সাধারণ জনগণের স্বাধীনতাকে খর্ব করে চলেছে। যাঁরা রাষ্ট্রের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাঁদের কণ্ঠরোধ করা হয়। একেই কবি গলায় ফাঁস লাগান বলেছেন। কবি শাসকের এই অন্যায়-অবিচার দেখে চুপ করে থাকতে পারেন না। তিনি কবিতার মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এই অপরাধে কবিকে জেলে যেতে হয়। কিন্তু কবি তবুও হাল ছাড়েন না। জেলখানার গরাদের ফাঁক দিয়ে তিনি কবিতার মধ্য দিয়ে তাঁর প্রতিবাদী মনোভাব ব্যক্ত করেন। দেশের মুক্তিকামী মানুষও শাসক শক্তির হুঙ্কারকে ভয় পান না। তাঁরাও প্রতিবাদী হয়ে গর্জে উঠেন, পরোয়া করেন না মৃত্যুকে। ‘ঝিরঝিরে বৃষ্টিও হয়ে উঠেছে প্রবলঝড়’ এই পঙ্ক্তিতে দেশের প্রবল অশান্ত পরিবেশের পরিচয় দিয়েছেন কবি। সামান্য কারণে রাষ্ট্রদ্রোহের মতো বিরাট অপরাধে অপরাধী হতে হয় স্বাধীনচেতা নাগরিকদের সেটাই কবি উক্ত পঙ্ক্তিতে ব্যক্ত করেছেন। কবিতাটির মূল সুরে রয়েছে, মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রতিবাদ ধীরে ধীরে বিরাট এবং বিধ্বংসী আন্দোলনে পরিণত হয়, যা প্রবল শক্তিধর শাসক শক্তিকেও পরাজিত করতে পারে। ‘তুচ্ছ ফাঁসুড়েকে দিচ্ছে ঝুলিয়ে’ এখানে ফাঁসুড়ে হল শাসক শক্তির প্রতিনিধি, আর সেই ফাঁসুড়েকে ঝোলানর মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতাকামী মানুষের জয়ের ইঙ্গিত।
- রাষ্ট্র- দেশ।
- খর্ব করা- শেষ করা।
- কণ্ঠরোধ করা- বাক্স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া বা চুপ করান।
- স্বৈরাচারী শাসক- যিনি ইচ্ছামত দেশ পরিচালনা করেন। কারও কথা শোনেন না। সাধারণত অত্যাচারী রাজা বা দেশের শাসক শক্তিকে স্বৈরাচারী শাসক বলা হয়।
- শাসক শক্তি- যে শক্তি দেশ চালায়। যেমন, ইংরেজরা এক সময় আমাদের দেশে রাজত্ব করেছিল। সেই সময় তারা শাসক শক্তি ছিল।
- মুক্তিকামী মানুষ- যাঁরা স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চায়, অত্যাচার, বঞ্চনা থেকে মুক্তি চায়।
চারণ কবি কাকে বলা হয় ?
যে সমস্ত কবিরা ঘুরে ঘুরে প্রতিবাদী এবং সংগ্রামী চেতনামূলক গান গেয়ে মানুষকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করেন তাঁদের চারণকবি বলা হয়। বাঙালি কবি মুকুন্দ দাস একজন প্রসিদ্ধ চারণকবি ছিলেন।
১. ‘নিয়মকানুন যখন সব লোপাট’ এখানে কোন নিয়মের কথা বলা হয়েছে ? ‘লোপাট’ শব্দের অর্থ কী ?
উত্তরঃ দেশের আইন শৃঙ্খলার কথা বলা হয়েছে। ‘লোপাট’ মানে শেষ বা সমাপ্ত হওয়া। কবিতায় দেশের আইন শৃঙ্খলা নষ্ট হয়েছে বলে কবি মন্তব্য করেছেন।
২. ‘কালো মেঘের দল’ বলতে কী বোঝান হয়েছে ?
উত্তরঃ স্বৈরাচারী শাসককে ‘কালো মেঘের দল’ বলা হয়েছে।
৩. ‘ফাঁস লাগাচ্ছে গলায়’ কে, কাদের গলায় ফাঁস লাগাচ্ছে ?
উত্তরঃ দেশের শাসক দল সাধারণ প্রতিবাদী মানুষের গলায় ফাঁস লাগাচ্ছে। এখানে আসলে দেশের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা জনগণদের শাসক শক্তি দমন-পীড়ন করছে এমনটা বলা হয়েছে।
আরও পড়- হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোর্স কী ? চাকরির সুযোগ, কলেজ, কোর্স ফি ইত্যাদি সমস্ত কিছু এক নজরে:
৪. ‘চুঁইয়ে পড়ছে না কোনো রক্ত/কোনো চোখের জলও নয়’ কবি কী বলতে চেয়েছেন ?
উত্তরঃ শাসক দল মানুষকে শারীরিক ভাবে আঘাত করছে না কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে জনগণকে পিষে দিচ্ছে। এমন সব নিয়মকানুন বানান হচ্ছে যাতে নাগরিকদের স্বাধীনতা, অধিকার সব ছিন্ন হয়ে যায়। কবি এই স্বৈরাচারী আইনকানুনকে ‘ফাঁস লাগাচ্ছে গলায়’ বলেছেন।
৫. ‘ঘূর্ণিপাকে বিদ্যুৎ হয়ে উঠছে বাজ’/ ‘ঝিরঝিরে বৃষ্টিও হয়ে উঠেছে প্রলয়ঝড়’ অর্থ কী ?
উত্তরঃ ক্ষমতার অপব্যবহার করে শাসক শক্তি সামান্য কারণে মানুষকে যখন-তখন হেনস্থা করছে এবং বড় ধরনের শাস্তি দিচ্ছে। অনেক সময় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনছে, অর্থাৎ তিলকে তাল করা হচ্ছে।
- তিলকে তাল করা- সামান্য ঘটনাকে বড় করা।
৬. ‘বেরিয়ে আসছে কবির কোনো লিপিকার স্বর’ কোথা থেকে বেরিয়ে আসছে ? সেই স্বরের মধ্যে কী ছিল ?
উত্তরঃ জেলের গরাদ থেকে। সেই স্বরে মায়ের বেদনাশ্রু মেশানো ছিল।
- গরাদ- জানালায় লাগান লোহার শিক। এখানে জেলখানার লোহার রোডের দরজাকে বোঝান হয়েছে।
৭. ‘মায়ের বেদনাশ্রু’ এখানে মা বলতে কোন মায়ের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ নিজের দেশকে মা বলা হয়েছে। আমরা ভারতবর্ষ নামে দেশমাতৃকার সন্তান।
- বেদনাশ্রু- বেদনা+অশ্রু, বেদানায় যে অশ্রু বের হয়।
৮. ‘যখন কাঁপন লাগে জিভে’ মানে কী ?
উত্তরঃ এর অর্থ হল কবির কণ্ঠে প্রতিবাদী গান আসা। আসলে আমরা যখন কিছু উচ্চারণ করি তখন জিহ্বা কম্পিত হয়। এখানে কবি প্রতিবাদী গান ধরছেন তাই তাঁর জিভে ‘কাঁপন’ ধরে।
৯. ‘গান যখন হয়ে ওঠে যুদ্ধেরই শস্ত্র’ কবি কী বলতে চেয়েছেন ?
উত্তরঃ গানের মাধ্যমে প্রতিবাদ করা। অর্থাৎ কবি গান গেয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কথা বলেছেন।
- শস্ত্র- অস্ত্র।
১০. ‘কবিকে তখন ভয় পায় ওরা’ কারা, কেন কবিকে ভয় পায় ?
উত্তরঃ কবি প্রতিবাদী গানের অস্ত্র ধারণ করলে শাসক শক্তি কবিকে ভয় পায়।
১১. ‘কয়েদ করে তাকে’ কাকে, কে, কেন কয়েদ করে ?
উত্তরঃ কবি স্বৈরাচারী শাসক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী গান করলে তাকে কয়েদ করা হয়।
১২. ‘গর্দান’ শব্দের অর্থ কী ?
উত্তরঃ ঘাড়।
১৩. ‘আরো শক্ত করে জড়িয়ে দেয় __________’ শূন্যস্থান পূরণ।
উত্তরঃ ফাঁস।
১৪. ‘কবি তাঁর সুর নিয়ে শ্বাস ফেলছেন জনতার মাঝখানে’ মানে কী ?
উত্তরঃ কবি প্রতিবাদী গান গেয়ে জনতাকে প্রতিবাদী করে তুলেছেন। কবিতায় প্রতিবাদী গান গাওয়ার অপরাধে কবিকে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যেই তিনি জনতাকে প্রতিবাদের গান শুনিয়েছেন, এটাকেই ‘শ্বাস ফেলছেন’ বলা হয়েছে।
১৫. ‘ফাঁসির মঞ্চ ভারসাম্য রাখবার জন্য’ কী করছে ?
উত্তরঃ মিলিয়ে যাচ্ছে মাটিতে।
১৬. ‘ফাঁসির মঞ্চ/ ভারসাম্য রাখবার জন্য মিলিয়ে যাচ্ছে মাটিতে’ পঙ্ক্তিটির অর্থ কী ?
উত্তরঃ ‘ফাঁসির মঞ্চ’ স্বৈরাচারী শাসকের প্রতীক। সেই মঞ্চ মাটিতে মিলিয়ে যাওয়ার অর্থ শাসকের পতন ঘটছে।
১৭. ‘স্পর্ধা জানাচ্ছে মৃত্যুকে’ কারা স্পর্ধা জানাচ্ছে ? পঙ্ক্তিটির অর্থ কী ?
উত্তরঃ প্রতিবাদী জনতা। তাঁরা মৃত্যুকে ভয় পায় না, তাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে।
১৮. ‘ফাঁসুড়েকে দিচ্ছে ঝুলিয়ে’ ‘ফাঁসুড়ে’ কে ? কবি কী বলতে চেয়েছেন ?
উত্তরঃ ‘ফাঁসুড়ে’ হল শাসক গোষ্ঠী। প্রতিবাদী নাগরিকের সামনে শাসকের পরাজয়ের কথা এখানে কবি বলেছেন।
আরও পড়- Olympic Games History: অলিম্পিক গেমসের ইতিহাস ও তার ৩ হাজার বছরের জীবনচক্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
আরও পড়- বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়ো প্রশ্ন উত্তর, প্রথমভাগ
জেনে রাখা ভালো- WBCS পরীক্ষা সম্পর্কে নাড়ি নক্ষত্র