কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে UGC (University Grant Commission)। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বছরে দুইবার ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করার পরিকল্পনা করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। সাধারণত দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে মে – জুন মাসে বছরে একবারই ভর্তি হওয়া যায় কিন্তু এবার থেকে যাতে পড়ুয়ারা বছরে দুইবার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির সুযোগ পান সে নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান এম জগদেশ কুমার বলেন, “বর্তমান ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা বছরে একবারেই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান। এতে অনেকে নানা সমস্যার কারণে ভর্তি হতে পারেন না, ফলে তাদের সারা বছরটাই মাটি হয়ে যায়। পড়ুয়াদের এই সমস্যার কথা বিবেচনা করেই আমরা বছরে দুইবার ভর্তি চালু করার পরিকল্পনা করছি। মে – জুন মাসের পাশাপাশি জানুয়ারি – ফেব্রুয়ারি মাসেও আর একটি সেশনে ভর্তি হতে পারবে পড়ুয়ারা।”
ইউজিসি চেয়ারম্যান আরও জানান, ইতিমধ্যে অনলাইন এবং ওপেন এবং ডিসট্যান্স লার্নিং মোডে গত ২০২২-২৩ সেশনে দেশের বিভিন্ন ৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়কে দ্বি-বার্ষিক ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এতে দেখা যায় পড়ুয়াদের ভর্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। এই পরিসংখ্যান স্পষ্ট ইঙ্গিত করে কত বেশি সংখ্যক পড়ুয়া কোনো কারণবশত নির্দিষ্ট সময়ে ভর্তি হতে পারেন না। ফলে তাদের গোটা বছরটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই পড়ুয়াদের আরো বেশি করে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতেই এই সিদ্ধান্ত।
এই ব্যবস্থা পুরোপুরি শুরু হয়ে গেলে ভীষণভাবে উপকৃত হবেন উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী পড়ুয়ারা। কারণ অনেক শিক্ষার্থী কোন ব্যক্তিগত কারণে বা রোগভোগের জন্য বা আর্থিক কারণে সময় মতো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে পারেন না। যদি ভর্তির জন্য তাদেরকে বছরে আরও একটি সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে তারা সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের শিক্ষাকে পুনরায় জারি রাখতে পারবেন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এটি একটি উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে শিক্ষামহল।শুধুমাত্র ভারতবর্ষেই যে এই ব্যবস্থা প্রথম চালু হচ্ছে এমনটা কিন্তু নয় বরং বাস্তবটা সম্পূর্ণ বিপরীত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে থেকেই দ্বি-বার্ষিক ভর্তি প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। ফলে সেখানকার পড়ুয়ারা বছরে দুইবার ভর্তি সুযোগ পান। এই দিক থেকে ভারতবর্ষের পড়ুয়ারা অনেক পিছিয়ে ছিল এতদিন। তবে এই নিয়ম বাধ্যতামূলক নয়। যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো এবং ছাত্র-অধ্যাপক অনুপাত ঠিকমতো রয়েছে তারাই এই দ্বি-বার্ষিক ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করতে পারে। এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন কমিটির হতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে দেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় যদি দ্বি-বার্ষিক ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করে তাহলে আখেরে শিক্ষা ব্যবস্থাটাই বহির্বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে পাল্লা দেবে।