পশ্চিমবঙ্গ সরকার কৃষকদের আর্থিক নিরাপত্তা এবং সামাজিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য ২০১৯ সালে “কৃষক বন্ধু” প্রকল্প চালু করে। প্রকল্পটি প্রধানত রাজ্যের ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিকভাবে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে চালু করা হয়। রাজ্যের কৃষি দফতর পরিচালিত এই প্রকল্পের লক্ষ্য কৃষকদের নিয়মিত আয় এবং বীমা কভারেজ নিশ্চিত করা। এই স্কিমের মাধ্যমে কৃষকদের বছরে সর্বোচ্চ ₹১০,০০০ টাকা (দুটি কিস্তিতে, প্রতি একর জমিতে ₹৫,০০০) আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। প্রতি বছর দুটি সমান কিস্তিতে টাকা দেওয়া হয়। প্রথম কিস্তি খারিফ মৌসুমে আর দ্বিতীয় কিস্তি রবি মৌসুমে দেওয়া হয়। এই প্রতিবেদনে কৃষক বন্ধু প্রকল্প সম্পর্কে শুধুমাত্র পরিচয় দেওয়া হল। পরবর্তী প্রতিবেদনে এই প্রকল্প সম্বন্ধে সমস্ত আপডেট দেওয়া হবে, যেমন- কীভাবে আবেদন করতে হবে, কোথায় আবেদন করতে হবে, কবে নাগাদ টাকা পাওয়া যাবে, যারা টাকা পাবেন তাদের নামের তালিকা ইত্যাদি সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য এখানে পেয়ে যাবেন।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সুবিধাগুলি হল: Krishak bandhu scheme benefits
দুই ধরনের সুবিধা এই প্রকল্পে পাওয়া যায়। সেগুলি নিচে দেওয়া হল-
1. আর্থিক সহায়তা:
এক একর বা তার বেশি জমির মালিক যে সমস্ত কৃষক রয়েছেন তারা বছরে সর্বোচ্চ ₹১০,০০০ টাকা পাবেন। যা দুই কিস্তিতে (খরিফ ও রবি মৌসুমে) দেওয়া হবে।
অপরদিকে এক একরের কম জমি থাকলে বছরে ₹৪,০০০ টাকা পাবেন।
2. বিমা কভারেজ
কৃষক বন্ধু প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত রয়েছে এমন ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী কোনো কৃষকের অকাল মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে, তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ₹২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের যোগ্যতা: Krishak bandhu scheme eligibility
আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
বয়স হতে হবে ১৮-৪০ বছরের মধ্যে।
আবেদনকারীকে সক্রিয়ভাবে কৃষিকাজে যুক্ত থাকতে হবে।
যে সমস্ত কৃষকদের নিজস্ব চাষযোগ্য জমি বা যাদের রেকর্ড অফ রাইট্স (RoR), পাট্টা বা ফরেস্ট পাট্টা রয়েছে এবং নথিভুক্ত ভাগচাষিরা এই প্রকল্পের টাকা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
আবেদন প্রক্রিয়া এবং কৃষক বন্ধু প্রকল্প কি কি ডকুমেন্ট লাগবে
কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আবেদন করার প্রক্রিয়া বেশ সহজ। কৃষকরা ব্লক বা পঞ্চায়েত স্তরের অফিসে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে পারেন। এছাড়াও রাজ্য সরকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সরাসরি অনলাইনে এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করা যায়। আবেদনের লিঙ্ক প্রতিবেদনের শেষে দেওয়া রয়েছে, সেখান থেকে সরাসরি আবেদন করা যাবে। আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় নথিগুলি হল:
1. জমির দলিলপত্র।
2. পরিচয়পত্র হিসাবে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ড।
3. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ।
4. সম্প্রতি তোলা ছবি।
শেষকথা
কৃষক বন্ধু প্রকল্প নিঃসন্দেহে রাজ্যের কৃষকদের হিতের কথা বিবেচনা করে বাস্তবায়িত করা হয়েছে। কিন্তু কৃষকদের আর্থিক অনটনকে সম্পূর্ণরূপে দূর করতে হলে চাই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি, আনতে হবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। আধুনিক প্রযুক্তি এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহারই কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে এবং কৃষকদের আর্থিক দুরবস্থা কমাতে সহায়ক হবে। এর পাশাপাশি, কৃষি শিক্ষার প্রসার, ফসলের সঠিক মূল্যায়ন, এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে সবকিছু বাস্তবায়ন করতে পারলে কৃষকরা আরও ভালোভাবে লাভবান হতে পারবেন।
প্রয়োজনীয় লিঙ্ক: Krishak bandhu scheme apply online
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | Click Here |
আবেদন লিঙ্ক | Apply Now |
আরও পড়ুন- Olympic Games History: অলিম্পিক গেমসের ইতিহাস ও তার ৩ হাজার বছরের জীবনচক্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
আরও পড়ুন- WBCS পরীক্ষা সম্পর্কে A-Z খাঁটি তথ্য, In Depth Details