১. ‘Geography’ শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে ?
উত্তরঃ গ্রিক শব্দ ‘Geo’ এবং ‘Graphos’ থেকে সৃষ্টি হয়েছে। ‘Geo’ এর অর্থ ‘পৃথিবী’ এবং ‘Graphos’ শব্দের অর্থ ‘বিবরণ’। তাই ‘Geography’ বলতে ‘পৃথিবীর বিবরণ’ বোঝায়।
২. ভূগোলের জনক কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ গ্রিক দার্শনিক ইরাটোস্থেনিস (Eratosthenes: 276 BCE-194 BCE), তাঁর ‘Geographica’ গ্রন্থে প্রথমবার ‘Geography’ কথাটি ব্যবহার করা হয়। তিনি ‘ভূগোল’ বলতে ‘মানুষের বাসভূমি হিসাবে পৃথিবীর বিবরণ’ বুঝিয়েছেন।
জানার বিষয়ঃ হেকাটিয়াস (Hecataeus- ৫৫০-৪৭৬ BCE) একজন গ্রিক ইতিহাসবিদ এবং ভূগোলবিদ ছিলেন। তাঁর রচিত ‘জেসপেরিওডস’-কে ভূগোল শাস্ত্রের প্রথম বই হিসাবে ধরা হয়। অনেকে মনে করেন তিনিই ‘ভূগোল’ এর প্রকৃত জনক।
৩. আধুনিক ‘ভূগোল’ এর জনক কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ জার্মান দার্শনিক এবং ভূগোলবিদ আলেকজাণ্ডার ভন হামবোল্ট (১৯৬৯-১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দ)। তিনি ভূগোলকে বিজ্ঞানের একটি স্বতন্ত্র শাখা রূপে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর একটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল ‘কসমস’।
৪. পৃথিবীর প্রথম মানচিত্র কে আঁকেন ?
উত্তরঃ গ্রিক দার্শনিক অ্যানাক্সিমিন্ডার (Anaximander: 610-546 BC)।
৫. পৃথিবীর প্রথম প্রকৃত মানচিত্র কে আঁকেন ?
উত্তরঃ টলেমি (Claudius Ptolemy) তাঁর ‘জিয়োগ্রাফিয়া’ গ্রন্থে সর্ব প্রথম পৃথিবীর মানচিত্র আঁকেন।
৬. কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ভূগোল চর্চা শুরু হয় ?
উত্তরঃ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, ইংল্যান্ড, ১৮৮৮ সালে।
৭. পৃথিবীর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ভূগোল বিভাগ চালু করা হয় ?
উত্তরঃ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ১৮৯৯ সালে, ইংল্যান্ড।
৮. ভারতীয় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্ব প্রথম ভূগোল চর্চা শুরু হয় ?
উত্তরঃ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯২৭ সালে।
৯. পশ্চিমবঙ্গের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্ব প্রথম ভূগোল চর্চা শুরু হয় ?
উত্তরঃ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৫৩ সালে।
১০. ভূগোলের পরিধির মধ্যে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত ? (যে যে বিষয় নিয়ে ভূগোলে আলোচনা করা হয় তাকে ভূগোলের পরিধি বলে)
উত্তরঃ
- ভৌগোলিক অবস্থান নির্ণয়ঃ দ্রাঘিমা এবং অক্ষাংশ অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গার অবস্থান নির্ণয়।
- অঞ্চল অনুযায়ী পৃথকীকরণঃ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গাকে আলাদা আলাদা ভাবে সমীক্ষা এবং অনুশীলন (চর্চা) করা।
- মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্কে আলোচনাঃ ভূগোলের প্রধান দুটি উপাদান হল মানুষ এবং প্রকৃতি। তাই ভূগোলে তাদের পারস্পারিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়।
- মানুষের জীবনযাপন, অর্থনীতি, সংস্কৃতিঃ মানুষের জীবন ধারণের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তার সংস্কৃতি, রাজনৈতিক জীবন এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যকলাপ, এগুলি আলোচনা করাও ভূগোলের পাঠ্যক্রমের মধ্যে পড়ে।
১১. ‘কোরোলজি’ অর্থ কী ? কে এই শব্দের প্রথম ব্যবহার করেন ? কে শব্দটি জনপ্রিয় করেন ?
উত্তরঃ যে শাস্ত্রের মধ্যে পৃথিবীর একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের বিভিন্ন ভৌগোলিক উপাদানগুলির পারস্পারিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়, তাকে কোরোলজি বলে। গ্রিক ভূগোলবিদ স্ট্র্যাবো প্রথম শব্দটি ব্যবহার করেন এবং ভন রিচথোফেন এটি জনপ্রিয় করে তোলেন।
১২. ‘কোরোগ্রাফি’ কী ?
উত্তরঃ ক্ষুদ্র একটি অঞ্চলের, যেমন, গ্রাম, শহর, জেলা ইত্যাদির বিভিন্ন ভৌগোলিক উপাদানগুলির পারস্পারিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়, তাকে কোরোগ্রাফি বলে। টলেমি শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন।
১৩. ভূগোলের প্রকৃতি কী কী ?
উত্তরঃ
- বিজ্ঞানধর্মীঃ অন্যান্য বিজ্ঞান যেমন, পদার্থ বিজ্ঞান বা জীবন বিজ্ঞানের মতো ভূগোলও একটি বিজ্ঞান বিষয়। কারণ একটি বিষয়কে বিজ্ঞান হতে গেলে কতগুলি বৈশিষ্ট থাকতে হয়, যেমন পরীক্ষা করা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা ইত্যাদি। ভূগোলের মধ্যেও পরীক্ষা বা বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে। তাই একে বিজ্ঞান বিষয় বলা হয়।
- সমষ্টিভূত বিষয়ঃ পদার্থ বিদ্যা, প্রাণীবিদ্যা, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, মৃত্তিকা বিজ্ঞান ইত্যাদি বহু বিষয়ের আলোচনা ভূগোলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তাই একে সমষ্টিগত বিষয় বলা হয়।
- গতিশীল বিষয়ঃ ভূগোলের বিষয়বস্তু স্থির নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক নিত্য নতুন বিষয় আবিষ্কার হচ্ছে এবং তা ভূগোলে স্থান পাচ্ছে। তাই একে গতিশীল বিষয় বলা হয়।
- সব বিজ্ঞানের জননীঃ ভূগোলের আলোচ্য বিষয় নিয়েই অন্যান্য বিজ্ঞানের শাখাগুলি সৃষ্টি হয়েছে। যেমন, ভূগোলে মৃত্তিকা, ধাতু, বায়ু ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আর এই সব বিষয় নিয়েই পদার্থ বিদ্যার শাখা সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে ভূগোলে গাছপালা নিয়ে আলোচনা করা হয়, আর এই নিয়ে উদ্ভিদ বিদ্যা নামে স্বতন্ত্র বিজ্ঞানের শাখা রয়েছে। এভাবে আরও অনেক বিজ্ঞান ভূগোলের আলোচ্য বিষয় থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। তাই ভূগোলকে সব বিজ্ঞানের জননী বলা হয়।
১৪. ভূগোলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী কী ?
উত্তরঃ
- জ্ঞান অর্জনঃ পৃথিবীতে কেন্দ্র করে যত রকমের উপাদান বা বিষয় রয়েছে, যেমন- মৃত্তিকা, নদনদী, মানুষ, পাহাড়-পর্বত, ভূমিরূপ, বায়ু, আবহাওয়া-জলবায়ু, কৃষি, শিল্প ইত্যাদি সমস্ত কিছু সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান অর্জন করা ভূগোলের একটি প্রাথমিক উদ্দেশ্য।
- কার্যকারণ সম্পর্ক অনুসন্ধানঃ পৃথিবীতে অবস্থিত বিভিন্ন ভৌগোলিক উপাদানগুলির পারস্পারিক সম্পর্ক নির্ণয় করা ভূগোলের আর একটি মুখ্য উদ্দেশ্য। পর্বত কীভাবে সৃষ্টি হল ? তাপের সঙ্গে আবহাওয়ার কী সম্পর্ক ? প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং মানুষের মধ্যে সম্পর্ক কী ? ইত্যাদি বহু অজানা প্রশ্নের উত্তর খোঁজে ভূগোল।
*** নদী, পাহাড়-পর্বত, গাছপালা, লোহা, কয়লা, জল, ইত্যাদি যে সমস্ত বস্তু বা বিষয় পৃথিবীতে পাওয়া যায় সমস্ত বিষয়কে ভৌগোলিক উপাদান বলে।
১৫. ভূগোলের প্রধান শাখাগুলি কী কী ?
উত্তরঃ ভূগোলের অসংখ্য প্রধান শাখা এবং উপ শাখা রয়েছে, তার মধ্যে মুখ্য তিনটি শাখা নিচে দেওয়া হল-
- আঞ্চলিক ভূগোল
- প্রাকৃতিক ভূগোল
- মানবীয় ভূগোল
১৬. প্রাকৃতিক ভূগোলের মধ্যে কী কী শাখা রয়েছে ?
উত্তরঃ
- জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় ভূগোল
- ভূমিরূপ বিদ্যা
- জলবায়ু বিদ্যা
- ভূজল বিদ্যা
- সমুদ্র বিদ্যা
- মৃত্তিকা বিদ্যা
- জীব বিদ্যা
১৭. মানবীয় ভূগোলের মধ্যে কী কী শাখা রয়েছে ?
উত্তরঃ
- রাশিমাত্রিক ভূগোল
- অর্থনৈতিক ভূগোল
- জনসংখ্যা ভূগোল
- রাজনৈতিক ভূগোল
- ঐতিহাসিক ভূগোল
- সামাজিক ভূগোল
- দার্শনিক ভূগোল
- সাংস্কৃতিক ভূগোল
১৮. GPS এর পুরো নাম কী ?
উত্তরঃ Global Positioning System । মাহাকাশে প্রেরিত কৃত্রিক উপগ্রহের সাহায্যে পৃথিবীর যে কোন স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা হয় GPS সিস্টেমের মাধ্যমে। বর্তমানে মোবাইলে নিজের লোকেশন দেখতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
১৯. প্রাকৃতিক ভূগোলের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি কী কী ?
উত্তরঃ মহাকাশ, গ্রহ, নক্ষত্র, শিলা, মাটি, জল, বায়ু, প্রাকৃতিক শক্তি, আবহাওয়া-জলবায়ু, উদ্ভিদ-প্রাণী, ভূমিরূপ ইত্যাদি।
২০. প্রাকৃতিক ভূগোলের জনক কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ আলেকজান্ডার ভন হামবোল্ট।
আরও পড়- বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়ো প্রশ্ন উত্তর , প্রথমভাগ
আরও পড়- WBCS পরীক্ষা সম্পর্কে A-Z খাঁটি তথ্য, All in one click
*** পরবর্তী আরও প্রশ্ন উত্তর প্রকাশ করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পড়াশোনা কর এবং Stay tune…