লাইব্রেরি এবং ইনফরমেশন সাইন্স কোর্সে ভর্তি শুরু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, ক্যারিয়ার তৈরির দারুণ কোর্স: BLISc Admission 2024, Jadavpur University

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে লাইব্রেরি এবং ইনফরমেশন সায়েন্সের স্নাতক স্তরে (Bachelor of library and information science- BLISc) ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। যে কোনো শাখায় নির্দিষ্ট নম্বর পেয়ে স্নাতক হলেই এই কোর্সের জন্য আবেদন করা যাবে এবং যাদবপুরের মতো একটি সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ মিলবে। তবে আগ্রহী প্রার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এই কোর্সে ভর্তির যোগ্যতা, আবেদন কৌশল, প্রবেশিকা পরীক্ষা এবং এই কোর্স সম্পন্ন করার পর ক্যারিয়ারের সুযোগ- সুবিধা সম্পর্কে বিশদে এই প্রতিবেদনে আলোচনা করা হল।

শিক্ষাগত যোগ্যতা (Eligibility Criteria)

চার ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা এই কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিচে একে একে সমস্ত যোগ্যতার মাপকাঠি দেওয়া হল।

  • অনার্স গ্রাজুয়েটদের ক্ষেত্রে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তত ৫০ শতাংশ নম্বর নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হতে হবে। ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্তরা ৪৫ শতাংশ এবং তফসিলি ও তফসিলি উপজাতি প্রার্থীরা ৪০ শতাংশ নম্বর পেলেই আবেদন করতে পারবেন।
  • পাস গ্রাজুয়েটদের ক্ষেত্রে কোনো স্বীকৃতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তত ৫৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হতে হবে। ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্তদের ৪৯.৫% শতাংশ এবং তফসিলি ও তফসিলি উপজাতি প্রার্থীদের ৪১.২৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে।
  • অনার্স বা পাস কোর্সে স্নাতক উত্তীর্ণদের যদি লাইব্রেরি সাইন্সে সার্টিফিকেট কোর্স করা থাকে এবং তাতে ৬৫ শতাংশ নম্বর থাকে তাহলে তারা আবেদন করতে পারবেন। তপসিলি ও তপসিলি উপজাতিদের ক্ষেত্রে ৪৮.৭৫ শতাংশ এবং ওবিসি প্রার্থীদের ৫৮.৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে।
  • এছাড়াও যাদের ইঞ্জিনিয়ারিং/টেকনোলজি/মেডিকেল বা আইন নিয়ে স্নাতক ডিগ্রী রয়েছে তারাও আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে নম্বরের কোন উল্লেখ বিজ্ঞপ্তিতে নেই।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক দেওয়া কিছু শর্ত

  • প্রতি ক্ষেত্রেই প্রার্থীর সম্পূর্ণ রেজাল্ট হাতে থাকতে হবে। যদি কেউ ফাইনাল ইয়ারের পড়ুয়া হয়ে থাকেন এবং ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের সময় কমপ্লিট রেজাল্ট দেখাতে অসমর্থ হন সেক্ষেত্রে তার আবেদনপত্রটি বাতিল করা হবে।
  • অন্যদিকে যাদের রেজাল্টে গ্রেড উল্লেখ করা রয়েছে কোনো প্রাপ্ত নম্বর বা শতাংশের উল্লেখ নেই, তাদেরকে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেডকে নম্বরে বা শতাংশে পরিবর্তিত করে নিতে হবে।

এই কোর্স করলে কী কী চাকরির সুযোগ পাওয়া যায় ? (Career opportunities for library and information science)

মূলত গ্রন্থাগারে বইয়ের দেখাশোনা করা এবং যারা বই নিতে আসেন তাদেরকে বই সরবরাহ করাই গ্রন্থাগারিকের কাজ। আপাত দৃষ্টিতে কাজটি খুব সহজ মনে হলেও এই নিয়ে পড়াশোনা করার অবকাশ আছে বৈকি। আধুনিক গ্রন্থাগার প্রযুক্তির হাত ধরে নিজেকে অনেক উন্নত পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। তাই বইয়ের দেখাশোনা করা বাদেও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে একজন গ্রন্থাগারিককে তথ্য সংরক্ষণ এবং ডেটা প্রসেসিং এর মতো নানা কাজ বর্তমানে করতে হয়। ডিজিটাল দুনিয়ার পথে যত আমরা এগোচ্ছি ততই তথ্যবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করা পেশাদারদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

লাইব্রেরি এবং ইনফরমেশন সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করা থাকলে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পাওয়া যায়। সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বাদেও বিধানসভা, পার্লামেন্ট বা ইসরোর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থায় লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ করা হয়। তেমনি বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় পেশাদারদের চাহিদা রয়েছে।
এই কোর্স করার পর যে সমস্ত উল্লেখযোগ্য পদে চাকরি পাওয়া যায় সেগুলি হল;
ল লাইব্রেরিয়ান, ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান, লাইব্রেরি অ্যাসিস্ট্যান্ট, ওয়েব সংরক্ষণকারী, লাইব্রেরি ম্যানেজার, মেটা ডেটা অ্যানালিস্ট, ডেটা অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, ডকুমেন্ট কন্ট্রোল স্পেশালিষ্ট-সহ আরও অনেক সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থায় চাকরির সুযোগ থাকে।

আবেদন কৌশল (Application Process)

আগ্রহী প্রার্থীদের এই কোর্সের ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন জানাতে হবে পাশাপাশি আবেদন মূল্যও অনলাইনেই জমা দিতে হবে। আবেদনের লিঙ্ক এবং অফিসিয়াল নোটিফিকেশনের PDF প্রতিবেদনের শেষে দেওয়া রয়েছে, সেখান থেকে সরাসরি আবেদন করা যাবে। ইতিমধ্যে ১৫ মে থেকে আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে এবং ৩১ মে পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।
আবেদন মূল্য হিসেবে অসংরক্ষিত প্রার্থীদের ২০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। যথারীতি সংরক্ষিত প্রার্থীরা আবেদনমূল্যের উপর ছাড় পাবেন। তপসিলি, তপসিলি উপজাতি এবং বিশেষভাবে সক্ষম প্রার্থীদের আবেদনমূল্য ১০০ টাকা জমা করতে হবে।

প্রবেশিকা পরীক্ষার প্যাটার্ন এবং সিলেবাস (Syllabus and Pattern of the Entrance Examination)

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রার্থীদের নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দেখাতে হবে তবেই মিলবে সংশ্লিষ্ট কোর্সে ভর্তির ছাড়পত্র। বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী ১১ জুন বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ডিপার্টমেন্টে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১০০ নম্বর পরীক্ষা হবে এবং প্রশ্নও থাকবে ১০০টি। প্রশ্ন হবে মাল্টিপল চয়েস ভিত্তিক (MCQ), সময় দেওয়া থাকবে ৯০ মিনিট।
পরীক্ষায় কী কী বিষয়ের উপর প্রশ্ন থাকবে তার তালিকা নিচে দেওয়া হল।

এন্ট্রান্স এক্সাম প্যাটার্ন

English Composition 

২০

Basic Mathematics 

১৫

General Science 

১৫

History & Geography 

১৫

Indian Polity, Economy and Culture 

১৫

Current events of National & International Importance 

১০

General Mental Ability 

১০

 মোট

১০০

গুরুত্বপূর্ণ তারিখ

আবেদন শুরু১৫ মে ২০২৪
আবেদন শেষ৩১ মে ২০২৪
এন্ট্রান্স পরীক্ষার তারিখ১১ জুন ২০২৪ , দুপুর ১২টা
সম্ভাব্য মেরিট লিস্ট প্রকাশ১৮ জুন ২০২৪

প্রয়োজনীয় লিঙ্ক

অফিসিয়াল ওয়েবসাইটClick Here
অফিসিয়াল নোটিফিকেশনDownload
আবেদন লিঙ্কApply Now
সবার সঙ্গে শেয়ার করুন
WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now

Leave a comment