সাম্যবাদী কবিতার প্রশ্ন উত্তর, মূলভাব, উৎস, একাদশ শ্রেণি প্রথম সেমিস্টার: Samyabadi kobila, PART 1

এবারে প্রথমবার একাদশে সেমিস্টার পদ্ধতিতে MCQ ধরনের পরীক্ষা হবে। তথ্যগত না বোধ পরীক্ষণ মূলক প্রশ্ন হবে তার কোনো স্পষ্ট নির্দেশিকা সংসদ থেকে দেওয়া হয়নি। আবার, যেহেতু বিগত বছরের প্রশ্নপত্রও হাতে নেই তাই কিছুটা অনুমানের উপর ভিত্তি করে আমাদের প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে হবে। এমন ক্ষেত্রে যত বেশি জানা যায় ততই ভালো। সেটা মাথায় রেখেই আমাদের প্রশ্ন-উত্তর পর্ব কেবলমাত্র MCQ ধরনের না রেখে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলার প্রয়াস করা হয়েছে। যাতে প্রশ্ন-উত্তরগুলো মন দিয়ে পড়লে যে জ্ঞান অর্জিত হবে তার মাধ্যমে যে কোন প্রশ্নের সমাধান করা যায়। আশা করা যায়, আমাদের সঙ্গে প্রস্তুতি নিলে পরিশ্রম বিফলে যাবে না, বরং খুব ভালো ফল হবে।

সাম্যবাদী
কাজী নজরুল ইসলাম
কাজী নজরুল ইসলাম, (২৫ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬) বাংলা সাহিত্যের একজন বাঙালি কবি, লেখক, সাংবাদিক এবং সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। তাঁর কবিতা পরাধীন ভারতের জাতীয় সংগ্রামীদের ভীষণ ভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তাই তাঁকে ‘বিদ্রোহী’ কবি বলা হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল, অগ্নিবীণা, সাম্যবাদী, চক্রবাক, বিষের বাঁশি, ভাঙ্গার গান, ছায়ানট, সর্বহারা, ফণীমনসা প্রভৃতি। আলোচ্য কবিতাটি ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। প্রথমে কবিতাটি ‘লাঙ্গল’ পত্রিকায় ১৯২৫ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।

১. ‘সাম্যবাদী’ শব্দের অর্থ কী ?

উত্তরঃ সামানাধিকার মতাবলম্বী। যাঁরা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলকে সমান চোখে দেখে।

২. কুনফুসিয়াস কে ছিলেন ?

উত্তরঃ প্রাচীন সময়ের চীন দেশের একজন বিখ্যাত দার্শনিক ছিলেন।

৩. ‘এক হয়ে গেছে সব বাধা ব্যবধান’ কিসের বাধা ব্যবধানের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ জাতিগত ব্যবধানের কথা বলা হয়েছে।

৪. ‘যেখানে মিশেছে ___________’ শূন্যস্থান পূরণ।

উত্তরঃ হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রিশ্চান।

৫. ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কয়টি জাতির উল্লেখ রয়েছে ? ও কী কী ?

উত্তরঃ ১০টি। যথা, হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, ক্রিশ্চান, পার্সি, জৈন, ইহুদি, সাঁওতাল, ভীল, এবং গারো। ( নামগুলো পর পর যে ভাবে আছে তেমন করেই মনে রাখতে হবে, এই নিয়েও প্রশ্ন আসতে পারে)

৬. ‘চার্বাক’ দর্শন কী ? ‘চার্বাক চেলা’ কাদের বলা হয় ?

উত্তরঃ চার্বাক দর্শন হল ভারতীয় দর্শনের একটি বস্তুবাদী শাখা। যাঁরা চার্বাক দর্শনের মতাবলম্বী তাঁরা অধ্যাত্মবাদ মানেন না। তাঁরা নিরীশ্বরবাদী এবং বস্তুবাদী দর্শনকে সমর্থন করেন। গুরু বৃহস্পতিকে চার্বাক দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা মনে করা হয়। তবে ভিন্ন মতও রয়েছে। এই দর্শনের অনুগামীদের ‘চার্বাক চেলা’ বলা হয়।

  • নিরীশ্বরবাদী- যারা ঈশ্বর বিশ্বাস করেন না।
  • বস্তুবাদী- পার্থিব জগতে যাঁদের বিশ্বাস।

৭. ‘পুঁথি ও কেতাব বও’ কোথায় পুঁথি ও কেতাব বহনের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ পেটে-পিঠে, কাঁধে-মগজে।

৮. ‘পেটে-পিঠে, কাঁধে-মগজে যা-খুশি পুঁথি ও কেতাব বও’ পঙ্‌ক্তিটির অর্থ কী ?

উত্তরঃ বই (পুঁথি, কেতাব) পড়ে জ্ঞান অর্জন করা বা ধর্ম গ্রন্থ চর্চা করা।

৯. ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কী কী ধর্মগ্রন্থের উল্লেখ আছে ?

উত্তরঃ কোরান-পুরাণ-বেদ-বেদান্ত-বাইবেল-ত্রিপিটক-জেন্দাবেস্তা-গ্রন্থ সাহেব।

  • কোরান-ইসলাম ধর্মগ্রন্থ
  • বেদ ও পুরাণ- হিন্দু ধর্মগ্রন্থ
  • বাইবেল-খ্রীষ্ট ধর্মগ্রন্থ
  • ত্রিপিটক- বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ
  • জেন্দাবেস্তা- জরথুস্ত্রীয় বা পারসিক ধর্মগ্রন্থ
  • গ্রন্থ সাহেব- শিখ ধর্মগ্রন্থ 

১০. ‘কিন্তু কেন এ পণ্ডশ্রম’ কিসের পণ্ডশ্রমের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ ধর্মগ্রন্থ চর্চাকে কবি পণ্ডশ্রম বলেছেন।

আরও পড়- বিড়াল প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর, একাদশ শ্রেণির প্রথম সেমিস্টার: Biral Probondho Question Answer, Part 1

আরও পড়- চর্যাপদ প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণী, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি

১১. ‘মগজে হানিছ শূল ?’ এমন বলার কারণ ?

উত্তরঃ ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে মানুষ সংকীর্ণমনা এবং সাম্প্রদায়িক হয়ে উঠে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মনকে কুলুষিত করে বলেই কবি এমন মন্তব্য করেছেন।

১২. ‘দোকানে কেন এ দর-কষাকষি ?’ কিসের জন্য দর-কষাকষি ?

উত্তরঃ ধর্মগ্রন্থ কেনার জন্য দর-কষাকষি করার কথা বলা হয়েছে।

১৩. ‘পথে ফোটে তাজা ফুল !’ তাৎপর্য কী ?

উত্তরঃ মানুষের হৃদয়েই রয়েছে সকল শাস্ত্র ও ধর্ম জ্ঞান, বই-কেতাব পড়ে বা বাইরের দুনিয়ায় জ্ঞান খোঁজা অর্থহীন বলে মনে করেন কবি।

১৪. ‘তোমাতে রয়েছে _______________’ শূন্যস্থান পূরণ।

উত্তরঃ সকল কেতাব সকল কালের জ্ঞান।/সকল ধর্ম সকল যুগাবতার।

১৫. ‘সাব্যবাদী’ কবিতায় কবি কোথায় প্রকৃত জ্ঞানের সন্ধান করতে বলেছেন ?

উত্তরঃ নিজের মধ্যে বা আপন হৃদয়ে।

১৬. ‘সকল শাস্ত্র খুঁজে পাবে’ কোথায় ?

উত্তরঃ নিজ প্রাণে।

১৭. ‘তোমাতে রয়েছে সকল কেতাব সকল কালের জ্ঞান।’ বা ‘তোমাতে রয়েছে সকল ধর্ম সকল যুগাবতার।’ বা ‘সকল শাস্ত্র খুঁজে পাবে সখা খুলে দেখ নিজ প্রাণ !’ পঙ্‌ক্তিগুলোর তাৎপর্য কী ?

উত্তরঃ ধর্মগ্রন্থ পড়ার মূল উদ্দেশ্যই হল মানবিকতায়, মনুষ্যত্ববোধে বিকশিত হওয়া। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে সমান চোখে দেখা। কবি মনে করেন সমস্ত উচ্চ আদর্শ, নৈতিকতা, বিবেক আমাদের মনের মধ্যেই থাকে। তাই ধর্মগ্রন্থ পড়ে বা বহিঃবিশ্বের জগতে প্রকৃত জ্ঞানের সন্ধান করা অনর্থক। সকল জ্ঞানের খনি আমাদের হৃদয়ের মধ্যেই রয়েছে।

(এত বড় উত্তর প্রথম সেমিস্টারে লিখতে হবে না ঠিকই কিন্তু এই লেখাগুলো পড়ে যে সামগ্রীক জ্ঞান হবে তার মাধ্যমে উক্ত পঙ্‌ক্তিগুলো থেকে কোন প্রশ্ন এলে সমাধান করা যাবে )

আরও পড়- Olympic Games History: অলিম্পিক গেমসের ইতিহাস ও তার ৩ হাজার বছরের জীবনচক্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আরও পড়- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কবিতার প্রশ্ন উত্তর, একাদশ শ্রেণির প্রথম সেমিস্টার: Ishwar Chandra Vidyasagar kobita question answer

সবার সঙ্গে শেয়ার করুন
WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now

Leave a comment